বার্তা সরণি প্রতিবেদক:
দেশে জেঁকে বসেছে শীত। হিম হিম ঠাণ্ডা আর কুয়াশায় নাকাল জনজীবন। শীতের এই তীব্রতা বেশি কাবু করেছে নিম্ন আয়ের মানুষকে। মানবেতর দিন কাটছে হতদরিদ্রদের। শীতার্ত অসহায় ও দুস্থ মানুষের উষ্ণতা দিতে সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে পাশে দাঁড়াল জাতীয় দৈনিক বার্তা সরণি পত্রিকা।
আজ শনিবার (৭ জানুয়ারি)পাবনা জেলার সাঁথিয়া থানার নাগডেমরা ইউনিয়নের বড় পাথাইলহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে দুই হাজার শীতার্ত অসহায় ও দুস্থ মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয় জাতীয় দৈনিক বার্তা সরণি পত্রিকাটির পক্ষ থেকে।দিন এনে দিনে খাওয়া এই মানুষগুলো এমনিতে কষ্টে আছেন। তার মধ্যে তীব্র শীত। এদিকে নেই গরম কাপড়। সবমিলে কষ্ট যেন দ্বিগুণ। শীত নিবারণে কম্বল পেয়ে তারা মহাখুশি।
কম্বল বিতরণকালে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাঁথিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাঁথিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (দেলোয়ার), সাঁথিয়া পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সোহেল রানা খোকন, নাগডেমরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হাফিজুর রহমান (হাফিজ), নাগডেমরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মো. গোলাম সাকলাইন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মো. শাহজাহান আলী মোল্লা, মো. জালাল উদ্দিন (মাস্টার), মো. মিনহাজুল জান্নাত, বিশিষ্ট সমাজ সেবক মো. রফিকুল ইসলাম মোল্লা,নাগডেমরা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়া্মী লীগের সভাপতি মো. রমিজুল ইসলাম (ঠান্টু), বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. আ. রহিম, সমাজ সেবক মো. দুলাল উদ্দিন মোল্লাসহ নাগডেমরা ইউনিয়নের সকল ওয়ার্ডের নির্বাচিত মেম্বারগণ। শীতবস্ত্র বিতরণকালে তারা বলেন, আমরা আপনাদের ঘরের সন্তান। এই শীতে আপনারা অমানবিক কষ্ট করবেন, তা মেনে নেয়া যায় না। আপনাদের প্রতি বুকভরা ভালোবাসা, শ্রদ্ধাবোধ, সম্মান ও সহমর্মিতা নিয়ে আমরা এখানে এসেছি, পরিবারের সদস্য হিসেবে আপনাদের পাশে দাঁড়াতে। তারা আরো বলেন, দেশে শীতের তীব্রতা বাড়ায় দরিদ্র ও অসহায় মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। শীত এলেই দরিদ্র অসহায় মানুষ শীতে কাতর হয়ে যায়, খাবারের চেয়েও তাদের শীত নিবারণ অতীব প্রয়োজন হয়ে পড়ে। সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তশালীদের শীতার্ত মানুষদের পাশে দাঁড়াতে হবে। বিশেষ করে আমাদের নজর দিতে হবে ছিন্নমূল খেটে খাওয়া মানুষ, শিশু ও বয়স্কদের প্রতি। মানবতার পাশে দাঁড়ানোই হচ্ছে সর্বোত্তম কাজ।
পলিথিন আর বেড়া দিয়ে ঝুপড়ি ঘর করে বসবাস করে মোছাঃ নাজমা খাতুন। এতে তিনি হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন শীতের তীব্রতা। কম্বল পেয়ে তিনি বলেন, যেখানে প্রতিবেলা খাবারের টাকা যোগাতে হিমসিম খেতে হয় সেখানে গরম কাপড় কেনা যেন দুঃসহ ব্যাপার। এই মুহূর্তে চাওয়া ছিল একটি কম্বল অথবা গরম কাপড়। আজ কম্বল পেলাম।
মোছাঃ রওশনারা খাতুন এক বৃদ্ধা জানান, বেড়ার ঘর হওয়াতে বিকালের পর থেকে ঠাণ্ডা লাগতে শুরু করে। গমর কাপড় বলতে পুরাতন একটি গেঞ্জি আছে। তাও পাতলা হওয়াতে ঠাণ্ডা মানে না। এছাড়া রাতে ঘুমানোর জন্য যে কাঁথাটি রয়েছে তাও পাতলা। এই শীতে তার খুবই কষ্ট হচ্ছিল। এই কম্বল যেন তার জীবনে আশির্বাদ হয়েছে।
মোছাঃ খাদিকা খাতুন নামে একজন জানান, প্লাস্টিক কুড়িয়ে ভাঙারির দোকানে বিক্রি করে কোনভাবে জীবন চলে। তার ৫ সন্তানের মধ্যে ২ জনেরই ঠাণ্ডা লেগেছে। তার মধ্যে নেই গরম কাপড়। পরিবারের খাবারের টাকা যোগাতে গিয়ে তার হিমসিম খেতে হচ্ছে। তার মধ্যে গরম কাপড় কেনা তার জন্য অনেক কঠিন ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। কম্বল পেয়ে তিনি দৈনিক বার্তা সরণির সাফল্য কামনা করেন।
মো. নুরুল ইসলাম, মো. আমজাদ হোসেন ও মো. রওশন আলম জানান, তারা গরীব মানুষ। তাদের কেউ সহযোগিতার হাত বাড়ায় না। অর্থের অভাবে এমননিতে অনেক কষ্টে আছেন। তার মধ্যে শীত এই কষ্টকে বাড়িয়ে দিয়েছে দ্বিগুণ। আজ কম্বল পেয়ে তাদের অনেক ভাল লাগছে।