বার্তা সরণি প্রতিবেদক:
ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খানের যুক্তরাষ্ট্রে ১৪টি বাড়ি কেনার বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) দাখিল করা দুটি অভিযোগের অনুসন্ধানের অগ্রগতি জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। দুর্নীতি দমন কমিশনকে ১৫ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে জানাতে বলেছেন আদালত।
সোমবার (৯ জানুয়ারি) এ বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে নিয়ে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ মৌখিকভাবে এ আদেশ দেন।
আদালতে জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন নজরে আনেন দুদকের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলি।
আজ একটি জাতীয় দৈনিকে ‘ওয়াসার তাকসিমের যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ বাড়ি!’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক শহরে ১৪ বাড়ি কিনেছেন তাকসিম এ খান। সব বাড়ির দাম টাকার অঙ্কে হাজার কোটি ছাড়াবে। দেশ থেকে অর্থ পাচার করে তিনি এসব বাড়ির মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ইন্টারপোলসহ একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা এসব বাড়ি কেনার অর্থের উৎস ও লেনদেন প্রক্রিয়ার তথ্য তালাশে নেমেছে। বিপুল পরিমাণ অর্থে একের পর এক বাড়ি কেনার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তালিকায় সন্দেহভাজন হিসেবে তাকসিমের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ বাড়ি এবং অর্থ পাচারকারী হিসেবে তাকসিমের নাম আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা সংস্থার তালিকায় আসায় সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে দুদকে দুটি অভিযোগ জমা পড়ে।
অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে তাকসিমের কিছু বাড়ির সুনির্দিষ্ট ঠিকানা, ছবি, কোন বাড়ি কখন, কত টাকায় কেনা তা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া তাকসিমের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির (সিআইএ) গভর্নমেন্ট ওয়াচ নোটিশের একটি কপিও অভিযোগের সঙ্গে দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০০৯ সাল থেকে ১৩ বছরে ওয়াসার এমডির দায়িত্বে থেকে সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতির টাকায় যুক্তরাষ্ট্রে একের পর এক বাড়ি কিনেছেন তাকসিম। তার কিছু বাড়ির তথ্য-প্রমাণ এরই মধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছে। বাকিগুলোর তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, ঢাকা ওয়াসা কর্মচারী বহুমুখী সমবায় সমিতির ১৩২ কোটি ৪ লাখ ১৭ হাজার ৪৬০ টাকা ছয়টি ব্যাংক থেকে বিভিন্ন চেকের মাধ্যমে তাকসিম এ খানের প্রত্যক্ষ মদদে ও নির্দেশে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করার অভিযোগে আদলতে একটি মামলাও চলমান। ওয়াসা এমডি তাকসিমসহ নয়জনের বিরুদ্ধে করা ওই মামলার তদন্তভারও দুদকের হাতে ন্যস্ত হয়েছে।
এছাড়া ২০২১ সালের ২৫ আগস্ট তাকসিমের সব ধরনের ব্যাংক হিসাব তলব করে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) চিঠি দিয়েছিল।