আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, বাংলাদেশের অগ্রগতি, সাফল্য, উন্নয়ন ও অর্জন যখন বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত তখন বিএনপি মহাসচিবের পাকিস্তান আমলের প্রশংসা করা অত্যন্ত দুঃখজনক। শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যকে ‘দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র ও রাষ্ট্রদ্রোহমূলক’ আখ্যায়িত করে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এ কথা বলেন ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখনকার তুলনায় পাকিস্তান আমল ভালো ছিলাম’ মর্মে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন রাষ্ট্রদ্রোহমূলক বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বিএনপির চিরাচরিত বাংলাদেশবিরোধী অবস্থান ও স্বাধীনতাবিরোধী অপরাজনীতির গোপন অভিসন্ধির আবারও বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, ‘স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র, প্রগতি ও দেশপ্রেমে বিশ্বাসী কোনও ব্যক্তি কিংবা সংগঠন এ ধরনের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী মন্তব্য করতে পারে না।’ বিএনপি নেতাদের এ ধরনের পাকিস্তানপ্রীতি বক্তব্য প্রমাণ করে যে মহান স্বাধীনতাকে অস্বীকার করে তারা এখনও বাংলাদেশে পাকিস্তানি ধারার রাজনীতির প্রবর্তন করতে চায় বলে মনে করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান পার্লামেন্ট ও গণমাধ্যমে যখন বাংলাদেশের অগ্রসরমান অর্থনীতির উচ্ছ¡সিত প্রশংসা করা হচ্ছে, তখন বিএনপি মহাসচিব নির্লজ্জভাবে পাকিস্তানের ‘দালালি’ করছেন। যখন তাদের বুদ্ধিজীবীরা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার মতো একজন সুদক্ষ নেতৃত্বের আকাক্সক্ষা ব্যক্ত করে তখন বিএনপি মহাসচিব পাকিস্তান আমলে ফিরতে চাচ্ছেন!’ বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশে যারা রাজনৈতিকভাবে এবং পারিবারিকভাবে পাকিস্তানি দর্শনের রাজনীতিকে লালন করে তারা স্বাধীনতার ৫০ বছর পর এখনও ‘পেয়ারে পাকিস্তান’ মন্ত্র জপছে।’ বিএনপি মহাসচিবের এ ধরনের বক্তব্য শুধু রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিলই নয়, ৩০ লাখ শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা বলেও মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিবের এই ধরনের বক্তব্য বিএনপিসহ একটি মহলের বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি আজ দেশে সুশাসনের কথা বলছে! মানুষের নিরাপত্তার কথা বলছে! দারিদ্র্যতার কথা বলেছে! কিন্তু তারা ভুলে গেলেও দেশবাসী ভুলে যায়নি, বিএনপি-জামাত অশুভ জোট সরকারের আমলে বাংলাদেশকে তারা কীভাবে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। দেশকে নিমজ্জিত করেছিল বিদ্যুৎহীন অন্ধকারে। বিদ্যুৎ ও সারের দাবীতে আন্দোলন করায় কৃষককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। হাওয়া ভবন খুলে অবাধ দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হয়েছিল; হাওয়া ভবনের মদদে অবৈধ কারসাজির মাধ্যমে রাষ্ট্রের সকল স্তরে নিজেদের দলীয় ক্যাডারদের নিয়োগ দিয়ে দেশের সকল প্রশাসনিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছিল বিএনপি। ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার সৃষ্টি ও ছাত্রদলের ক্যাডারদের নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগসহ অসংখ্য ষড়যন্ত্রমূলক কার্যকলাপের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনসহ দেশের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করেছিল বিএনপি। শায়খ আবদুর রহমান, মুফতি হান্নান ও বাংলা ভাইয়ের মতো কুখ্যাত জঙ্গি নেতাদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের অভায়ারণ্যে পরিণত করা হয়েছিল; দশ ট্রাক অস্ত্র, সিরিজ বোমা হামলাসহ অসংখ্য জঙ্গি ও সন্ত্রাসী হামলায় ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছিল বাংলাদেশ। ২০০৪ সালের ২১শে আগস্টের নারকীয় গ্রেনেড হামলার নেপথ্য কারিগর ও হামলাকারীদের পৃষ্ঠপোষকদের মুখে নিরাপত্তার কথা জনগণের সঙ্গে উপহাস ছাড়া আর কিছু নয়। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মেগা প্রকল্প দেখলে বিএনপি মেগা-যন্ত্রণায় ভোগে। কারণ বিএনপির সময় বাংলাদেশের অর্থনীতি এতটাই নাজুক অবস্থায় ছিল যে, তারা দেশে কোনো মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের মানসিকতা, সাহস, দক্ষতা এবং আর্থিক সামর্থ্যরে কথা চিন্তাও করতে পারে নাই। কারণ তারা দুর্নীতি ও লুটপাটে আকণ্ঠ নিমজ্জিত ছিল। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সুদক্ষ নেতৃত্ব, প্রজ্ঞা, সততা ও মেধা দিয়ে বাংলাদেশকে আজকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন। বিশ^সভায় আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে ক্ষুধা-দুর্ভিক্ষ মঙ্গা-খরা ও দারিদ্র্যকে জয় করে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের নবতর অভিযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে। পাকিস্তানি প্রেতাত্মা ও ষড়যন্ত্রকারীরা যতই অপচেষ্টা চালাক না কেন, বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে বাংলার জনগণ দেশবিরোধী সকল চক্রান্ত মোকাবিলা করে উন্নয়নের এই অভিযাত্রা অব্যাহত রাখবেÑ আগামী প্রজন্মের জন্য আমরা একটি উন্নত-সমৃদ্ধ শান্তিপূর্ণ ও কল্যাণকর রাষ্ট্র বিনির্মাণে সক্ষম হবো, ইনশাল্লাহ্।
জনদর্পণ প্রতিবেদন
বার্তা সরণি প্রতিবেদন
| অনলাইন সংস্করণ