মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলি এসে পড়েছে বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তের বাংলাদেশ অভ্যন্তরে। মিয়ানমারে এখনও গোলাগুলি চলছে। কয়েক দিন ধরে দেশটির সীমান্তঘেঁষা এলাকায় গোলাগুলি চলছে। শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে সীমান্তঘেঁষা মিয়ানমার ভূখণ্ডে গোলাগুলি হয়। সেখান থেকে ছোড়া গুলি তুমব্রু এলাকায় এসে পড়েছে। এতে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানা গেছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সালমা ফেরদৌস বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলি তুমব্রু সীমান্তের কোনাপাড়া এসে পড়ার খবর স্থানীয় লোকজন জানিয়েছে। তবে এতে কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। সীমান্তের ওপারে গোলাগুলি শব্দ হচ্ছে। মাঝখানে মাত্র দুদিন গোলাগুলি বন্ধ ছিল। তারপর থেকে সেখানে গোলাগুলি চলছে। আমরা সীমান্তের খবর রাখছি।’
ঘুমধুম ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড সদস্য মো. আনোয়ার হোসেন জানান, আজ বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে গোলাগুলি শুরু হয়। পরে সন্ধ্যার দিকে ৩নং ওয়ার্ড তমব্রু ঘোনার পাড়া এলাকায় ক্ষুদ্রাস্ত্রের একটি গুলি এসে পড়ার খবর জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তবে এতে হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
তুমব্রু সীমান্তের বাসিন্দা মো. কামাল বলেন, ‘বিকাল থেকে ফের গোলাগুলি চলছে সীমান্তে। এখনও গুলির শব্দ কানে আসছে। রাত হওয়ায় মানুষজন ভয়ে আছে। শুনেছি, আজকে মিয়ানমার থেকে আরও একটি গুলি এসে এখানে পড়েছে। আকাশে যুদ্ধবিমানও দেখা গেছে।’
সীমান্তে বসবাসকারীরা বলেন, বিকাল থেকে হঠাৎ আবারও নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তের মাঝামাঝি স্থানে মিয়ানমার সীমান্তে বৃষ্টির মতো গোলাগুলি হচ্ছে। আজকে অন্যদিনের চেয়ে বেশি শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। রাত ৮টা পর্যন্ত গুলিবর্ষণের আওয়াজ পাওয়া গেছে। তুমব্রু কোনারপাড়ায় মিয়ানমার থেকে একটি গুলি এসে পড়ার ঘটনাও ঘটেছে। এতে সীমান্তের লোকজন আতঙ্কেও রয়েছেন। এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বান্দরবানের পুলিশ সুপার (এসপি) তারিকুল ইসলাম তারিক।
এদিকে পাঁচ বছর ধরে ওই সীমান্তের শূন্যরেখায় বসবাস করে আসছেন চার হাজারের বেশি রোহিঙ্গা। কয়েক দিন ধরে সীমান্তঘেঁষা এলাকায় মর্টারশেল-গোলা ছোড়ার পাশাপাশি সীমান্তের আকাশে যুদ্ধবিমান থেকেও ছোড়া হচ্ছে। নোমেন্সল্যান্ডে থাকা রোহিঙ্গাদের দিন আতঙ্কে কাটছে। এ বিষয়ে নোমেন্সল্যান্ডের রোহিঙ্গা শিবিরের নেতা দিল মোহাম্মদ বলেন, ‘বিকাল ৩টার পর থেকে গোলাগুলি শুরু হয়েছে। এখনও (রাত ৮টা) চলমান রয়েছে। আজকে খুব বেশি ভারী অস্ত্রের শব্দ আসছে। এতে শূন্যরেখার রোহিঙ্গারা খুব ভয়ভীতির মধ্য আছেন।’
এদিকে, গত ৩ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া দুটি গোলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকায় পড়ে। তার আগে ২৮ আগস্ট বিকাল ৩টার দিকে মিয়ানমার থেকে নিক্ষেপ করা একটি মর্টারশেল অবিস্ফোরিত অবস্থায় ঘুমধুমের তুমব্রু উত্তর মসজিদের কাছে পড়ে। উভয় ঘটনায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
জনদর্পণ প্রতিবেদন
বার্তা সরণি প্রতিবেদন
| অনলাইন সংস্করণ